Header Ads

অত্যাচারী বউ ৩-৪

                                                      আত্যাচারী বউ পর্ব

ব্যাগ খুলতেই দেখলাম সেখানে কোন ফাইল নেই। তারমানে আয়েশা ইচ্ছা করে ব্যাগে কোন ফাইল দেই নি। আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। এখন কি করবো? ঠিক এমন সময় আমার বন্ধুর নিহাল এসে উপস্থিত।

নিহালঃ দোস্ত মিটিং আসবি না।

আমিঃ আসলে দোস্ত আমি আমার ফাইলগুলো আনতে ভুলে গেছি।

নিহালঃ কি বলস এগুলো।

আমিঃ সত্যিই এখন খেয়াল করলাম যে আমি ফাইল আনতে ভুলে গেছি।

নিহালঃ আচ্ছা তুই আমার ফাইলগুলো নে।

আমিঃ এটা কেমনে সম্ভব আমি তোর প্রেজেন্টেশন গুলো কেমনে নিব।

নিহালঃ বেশি বাড়াবাড়ি করবিনা তুই এগুলো নিয়ে যা। আমাদের দুজনের প্রেজেন্টেশন সেম ছিল।

আমি আর কথা না বাড়িয়ে ফাইলগুলো নিলাম এবং খুব ভালোভাবে প্রেজেন্ট করতে পারলাম। যার ফলে প্রজেক্ট আমরাই পেলাম।

আমিঃ দোস্ত আমি অনেক খুশি কারণ আমরা প্রজেক্ট পেয়ে গেছি।

নিহালঃ এই কথায় কিন্তু ট্রিট হবে।

আমিঃ আচ্ছা ট্রিট দিবো।

আমাদের অফিস শেষ করে আমরা সবাই আমাদের আড্ডার স্থানে গেলাম। সেখানে গিয়ে কিছুক্ষণ সবাই মিলে আড্ডা দিলাম। তারপর বাসায় ফিরে এলাম।

আমি (মনে মনে) চিন্তা করতে লাগলাম কি অত্যাচারই করে বাবা, এই অত্যাচারী বউ এর অত্যাচার আর কত দিন সহ্য করতে হবে কে জানে। এগুলো চিন্তা করতে করতে বাসায় চলে এলাম।

আয়েশাঃ এত সময় কেন লাগলো আপনার। অফিস তো অনেক আগে শেষ।

আমিঃ আপনাকে কৈফিয়ৎ দিতে হবে না আমার।

আয়েশাঃ কি বললি তুই আমাকে কৈফিয়ৎ দিবি না তো কাকে দিবি। তোর কি বউ আরো ৪-৫ টা আছে।

আমিঃ দেখুন আপনি আমার সাথে ভদ্রভাবে কথা বলুন। আমি আপনার সাথে ভদ্রভাবে কথা বলছি।

আয়েশাঃ তোর ভদ্রতার চৌদ্দ গুষ্টি কিলাই।

আমিঃ আপনি এখন আমার চৌদ্দগুষ্টি নিয়ে কথা বলবেন না কিন্তু। তাহলে কিন্তু অনেক খারাপ হবে।

আয়েশাঃ কি খারাপ হবে রে?

রাগী চেহারা নিয়ে আমার সামনে এগোচ্ছে আর আমি পিছনে যাচ্ছি। সিনেমায় দেখেছি নায়ক আগাই আর নায়িকা পিছাই কিন্তু এখানে উল্টা। আয়েশা যতই আগাচ্ছে আমি ততই পিচাচ্ছি। একটু পরে যাওয়ার আর পথ নেই কারণ আমি দেয়ালের সাথে লেগে গেছি।

আমিঃ দেখুন আয়েশা আমি এখন অফিস থেকে আসছি। আমার ফ্রেশ হতে হবে।

আয়েশাঃ ঠিক আছে বাবু ফ্রেশ হবে তার আগে একটু মিষ্টিমুখ করাবো তোমাকে।

আমিঃ আমি মিষ্টি একটু কম হয় আপনি জানেন না।

আয়েশাঃ এই মিষ্টি মিষ্টি না এই মিষ্টি তো আমার ঠোঁটের মিষ্টি।

আমিঃ কি আপনার ঠোঁটে

পুরো কথা শেষ করতে পারলাম না কারণ, ইতিমধ্যে আয়েশা তার ঠোঁট আমার ঠোঁটের সাথে লাগিয়ে দিল কতক্ষণ ছিল যানি না কিন্তু যখনই আয়েশা ছাড়লো তখনই আমরা দুজনা হাপাচ্ছিলাম।

আমিঃ আপনার লজ্জা শরম বলতে কিছু নেই?

আয়েশাঃ বাহ রে স্বামীর সামনে আবার কিসের লজ্জা।

ঠিক তখনই বেলের আওয়াজ হলো। আর দরজা খুলতে আমি যাকে দেখলাম তাকে দেখে আমি আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না।

 

 

                                                 আত্যাচারী বউ পর্ব ৪

দরজা খুলতেই আমি দেখলাম সেখানে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে।

আমিঃ কি কিছু বলবেন?

পুলিশঃ আসলে আমরা এখান থেকে খবর পেয়েছি যে, কোন আয়েশা চৌধুরী নামে একটি মেয়ের স্বামী অপহরণ হয়েছে।

আমিঃ আপনারা কি বলছেন?

পুলিশঃ আসলে আমরা এখান থেকে খবর পেয়েছি।

আমিঃ আপনারা নিশ্চয় কোন ভুল খবর পেয়েছেন কারাণ আয়েশা চৌধুরীর হাজবেন্ড আমি আর আমার কিছু হয়নি।

পুলিশঃ তাহলে আমাদের ইনফরমেশন ভুল। আমরা আপনাকে ডিস্টার্ব করার জন্য দুঃখিত।

এই কথা বলে তারা সেখান থেকে চলে গেল।

আমিঃ আয়েশা আপনার কি মাথা খারাপ?

আয়েশাঃ আমার মাথা খারাপ হতে যাবে কেন।

আমিঃ আপনি নিশ্চয়ই মেন্টাল।

আয়েশাঃ দেখুন আজেবাজে কথা বলবেন না আপনার অফিস টাইম অনেক আগে ছিল কিন্তু আপনি আসছিলেন না তাই আমি ওদেরকে কল দিয়েছিলাম।

রাগ আর থামিয়ে রাখতে পারলাম না দিলাম জরে দুটি চড়।

আমিঃ আপনি আসলে এগুলোর যোগ্য আপনার এসব অত্যাচার আর সহ্য হয় না।

আয়েশা কিছু না বলে কাঁদতে কাঁদতে সেখান থেকে চলে গেল।

একটু পরে আম্মু আব্বু বাসায় আসলো।

আম্মুঃ কি হয়েছে তুই কি বৌমাকে মেরেছিস নাকি? বৌমা কানছে কেন?

আমিঃ জানিনা তোমার বৌমা কেন কাঁদছে। জানতে চাই না।

আম্মুঃ এগুলো কি উল্টা পাল্টা কি কথা বলছিস। বউমা জেদল ধরেছে যে সে আর এখানে থাকবে না।

আমিঃ যে চলে যেতে চায় তাকে একটা আটকালে কেন। সে চলে যাক।

আম্মুঃ তোকে নিয়ে না আর আমি পারছি না।

একটু পরে আয়েশা রুমে আসলো।

আয়েশাঃ আমি আর ডিস্টার্ব করবো না। আমি চলে যাচ্ছি।

আমি কিছু না বলে আমার অফিসের কাজে মনোযোগ দিলাম।

আমি (মনে মনে) যে মেয়ে বিয়ের দুই তিন দিনের মাথায় বলতে পারে যে সে চলে যাবে। সে মেয়েকে কি আর ভালো করে বিশ্বাস করা যায়।

একটু পরে খেয়াল করলাম আয়েশা ব্যাগ গোছাচ্ছে।

আয়েশাঃ দেখুন আমি কিন্তু সত্যিকারে চলে যাচ্ছি।

আমিঃ ঠিক আছে যান বাপের বাড়ি যেতে কারো থেকে পারমিশন নিতে হয় না।

আয়েশাঃ আমি বাপের বাড়ি যাচ্ছি না। আমি একেবারে চলে যাচ্ছি।

আমিঃ ধূর আর ভাল্লাগেনা।

কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলাম। সোজা চলে গেলাম বন্ধু নিহালের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে মনে করলাম মনের কষ্ট একটু কম হবে কিন্তু মনে কষ্ট আরো বেড়ে গেল। আমি আয়েশা কে যেন ভুলতে পারছিনা। দুই দিনে মেয়েটাকে এতো আপন করে ফেললাম তাই। কারণ আয়েশা দেখতে অনেক সুন্দর। শুধু সুন্দর না তার প্রত্যেকটা কাজ তার প্রত্যেকটা কাজের ধরন আমাকে তার মায়ায় জড়িয়ে ফেলেছে। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম যে আয়েশাকে সরি বলবো।

বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বাসায় গিয়ে দেখলাম আম্মু আব্বু দুজনেই মন খারাপ করে সোফায় বসে আছে।

আমিঃ আম্মু আয়েশা কই?

আম্মুঃ সে চলে গিয়েছে।

আমিঃ মানে কোথায় গিয়েছে বাপের বাড়ি না।

আম্মুঃ তোর কি মাথা নষ্ট আয়েশা আমার বউমা একেবারের জন্য অস্ট্রেলিয়া চলে যাচ্ছে আজকে। সে আমাকে বিয়ের দিনই বলেছিল তুই যদি তাকে মারিস সে চলে যাবে অস্ট্রেলিয়া।

আমিঃ এগুলো কি বলছেন আমি জানি আপনি দুষ্টুমি করছেন সত্যি করে বলুন আয়েশা কোথায়?

আব্বুঃ তোর কি মাথা খারাপ তোকে বলা হল না সে চলে যাবে তাও তুই আটকালি না। (খুব রেগে গিয়ে এই কথাটি বলল)

তারপর তারা তাদের রুমে চলে গেল। এদিকে আমি খবর নিয়ে জানতে পারলাম যে টার দিকে আয়েশার ফ্লাইট। এখন ৬:৫০ তার মানে আমার হাতে আর দশ মিনিট সময় আছে। আমি একটি গাড়ি নিয়ে সোজা এয়ারপোর্টে পৌছালাম। সেখানে গিয়ে কিছু লোক থেকে খবর নিলাম যে প্লেন বাংলাদেশ টু অস্ট্রেলিয়া যাওয়া প্লেন ছেড়ে দিয়েছে নাকি।

আমি এক লোককে উদ্দেশ্য করে, ভাইজান বাংলাদেশ টু অস্ট্রেলিয়া বিমান কি ছেড়ে দিয়েছে?

লোকটিঃ হ্যাঁ ভাই!

আমিঃ কিহ!!!!!

                                                       পরের পর্ব             

 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.